জীবন একটি সুদীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রাপথে আপনার সাথে হাজার মানুষের দেখা হবে, কথা হবে, আপনার সাথে বন্ধুত্ব হবে আবার তা চোখের পলকে ভেঙেও যাবে। জীবনের এই সময়ের সবটুকু পথই সুন্দরভাবে কাটবে তা কিন্তু নয়। কারণ আপনি খারাপ সময়ের দেখা না পেলে সুখের মূল্য বুঝবেন না। তেমনি জীবন পথে অতিবাহিত হওয়া কঠিন সময় আপনার সংস্পর্শে না এলেও আপনি ভেতর থেকে কতটা আত্মবিশ্বাসী আর নিজের প্রতি আস্থা রাখতে পারেন তাও বুঝে উঠতে পারবেন না। জীবনে চলার পথে কখনও কঠিন সময় কখন আসবে তা যেমন কেউ জানেনা তেমনি সেই সময়ে কী করতে হবে তা নিয়েও আগে থেকে কোন কিছু ভেবে রাখা সম্ভব হয় না। কিন্তু যখন কঠিন সময়গুলো চলে আসে তখন অনেকেই অনেক কিছু ভেবে থাকেন। কেউ ভাবেন এই সময় আর শেষ হবার না। নিজের মধ্যে এই ধরনের চিন্তা ভাবনা আত্মবিশ্বাসকে হারিয়ে দেয়। তাই জীবনের এই বহমান ধারার মাঝে যখনি কঠিন সময় আসবে তখনি নিজের প্রতি আরও বিশ্বাসী হয়ে উঠুন। আর বলুন যে খারাপ সময় যেমন যাচ্ছে তেমনি ভালো সময় খুব সহজেই আসবে। জীবনের চরম বাজে মুহূর্তেও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আজ আমরা এই নিয়েই কিছু উপায় বিস্তারিত জানাবো আপনাদের যার ফলে আপনারা কঠিন সময়গুলোকে স্বাভাবিকভাবে পাড় করতে পারবেন। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক।

১. আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিঃ করুন পরিস্থিতিতে থাকা অবস্থায় মানুষ সবার আগে তার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। হারিয়ে ফেলে নিজের কর্মক্ষমতাকেও। তখন নিজেকে শুধু একটা বোঝা মনে হয়। আর আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেললে জীবনে চলার পথে আসা বাধাগুলোকে মোকাবেলা করা সম্ভব হয়ে উঠে না। কখনই কোন কাজে সাফল্য অর্জন করা যায় না। খাড়াপ সময়ে নিজেকে সঠিক পথে রাখতে হলে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে হবে। মনে রাখবেন আপনার আত্মবিশ্বাস তখনই বাড়বে যখন আপনি উদ্দেশ্যের দিকে অনেকটা এগিয়ে যাবেন, লক্ষ্যে স্থির থাকবেন। উদ্দেশ্য অর্জনের দিকে যতো বেশি অগ্রসর হবেন ততো বেশি আত্মবিশ্বাস বাড়তে থাকবে এরই সাথে জীবনের খারাপ সময়গুলোও ভালোভাবে কেটে যাবে।

২. নিজেকে ক্ষমা করতে শিখুনঃ মানুষ মাত্রই ভুল করে থাকে। আপনি আমি আমরা কেউই ভুল করা ছাড়া বড় হইনি। প্রতিনিয়তই আমরা ভুল করে যাচ্ছি। ভুল আমাদেরকে শিক্ষা দিয়ে থাকে। ভিন্নভাবে বাচতে সাহায্য করে। জীবনে চলার পথে খারাপ সময়গুলো আসারও বেশীরভাগ কারণ আমাদের “ভুল” থেকেই সৃষ্টি হয়। যখন আপনি মনে করবেন আপনার জীবনে একটি খারাপ সময় আসার একমাত্র কারণ আপনারই করা কোন ভুল তখন সেই মুহুর্তে নিজেকে ক্ষমা করার মানসিকতা রাখুন। নিজেকে ক্ষমা করার মাধ্যমে নতুন করে ভুল শুদ্রে কাজটি করুন।

৩. চিন্তাশীল হোনঃ চিন্তাশীল মানুষেরা সাধারণ মানুষ অপেক্ষা বেশি একটিভ হয়ে থাকেন। যেই মানুষ চিন্তা করার মাধ্যমে নতুন নতুন মাধ্যম বেড় করেন তারা কখনও জীবনে খারাপ সময় আসলে ভেঙ্গে পড়েন না। সেই সময়টাতে নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে তারা ভিন্ন কিছু চিন্তা করে থাকেন যার মাধ্যমে এই খারাপ সময়টাকে তাড়াতাড়ি কাটিয়ে চলে যাওয়া যায়।

৪. কাছের মানুষের সাথে মিশুনঃ জীবনের বাজে সময়গুলোতে সবার আগে যাদের কাছে পাওয়া যায় তারাই প্রকৃত বন্ধু। আমাদের প্রত্যেকেরই এমন কেউ একজন আছেন যার সাথে নিজেদের ভেতরের কথাগুলো শেয়ার করলে মনে কিছুটা প্রশান্তি মেলে। কখনও কোন খারাপ সময় পাড় করতে হলে সেই সময়টাতে এই উপায়টি অনুসরণ করুন। এতে আপনার চিন্তা ভাবন কিছুটা ভিন্নদিকে যাবে যা খারাপ সময়ে স্বাভাবিক থাকার জন্য বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

৫. শিক্ষা নিনঃ শিখার বিকল্প কোন কিছু দুনিয়াতে নেই। আপনার জীবনের কঠিন সময় পার করার জন্য যা যা করছেন তা আপনাকে যেমন জীবন সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছে তেমনি মানসিকভাবেও দৃঢ় করছে। জীবনের বাজে সময়ে আমরা ভাবি আসলেই কি এটি আমার প্রাপ্য ছিলো! আমি কি আসলেই এর জন্য উপযুক্ত ছিলাম! আমার ভাগ্য কি এতোই খারাপ! আসলে জীবনে এসব প্রশ্ন একটি অংশ। আপনি আপনার শরীরের কোনো অংশ ছাড়া যেমন চলতে পারবেন না, তেমনি এই প্রশ্নগুলো ছাড়া আপনি বুঝবেন না আসলে জীবনের অর্থ কী! তাই সময়ের দাবিতে আসা বাজে সময়কেও সুন্দরভাবে গ্রহণ করে তাকে পার করার সময় আপনার মাধ্যমে করা কাজ থেকে শিক্ষা নিন।